ই-কমার্স খাতের জন্য যা করা প্রয়োজন

Sep 25, 2022
Techs
ই-কমার্স খাতের জন্য যা করা প্রয়োজন

সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তার অধীন এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) কর্মসূচীর মাধ্যমে দেশব্যাপী ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্সের প্রসারের জন্য নীতি ও কাঠামোগত উন্নয়নে অনবরত কাজ করে যাচ্ছে। এটুআইয়ের পরিচালিত একশপ বিশ্বের প্রথম ইন্ট্রিগেটেড এসিস্টেড গ্রামীণ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এটি গ্রাহকদের বিশ্বস্ত ই-কমার্স, পেমেন্ট ও লজিস্টিক কোম্পানিগুলোকে একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করে জাতীয় পর্যায়ে ই-কমার্স অবকাঠামোর মেরুদণ্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

উদ্যোক্তা, উৎপাদক ও ভোক্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এসক্রো পেমেন্ট সিকিউরিটি সিস্টেম বাংলাদেশে চালু করায় একশপ অগ্রদূত। প্রতিষ্ঠানটি এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি সেন্ট্রাল কমপ্লেইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সহায়তা করছে। এটি হয়ে গেলে ই-কমার্স ইকোসিস্টেমে আন্তঃপরিচালনা ও জবাবদিহিতা তৈরি এবং সরকারকে খাতটির উন্নয়নে সহায়তা করতে পারবে।

এছাড়াও একশপ কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ যা প্রধানত নারী উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিচালিত হয় তাদের উন্মুক্ত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন আনন্দমেলা, ই-জয়িতা, উই, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন-বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ইমার্কেট এবং ডিজিটাল হাট–এর মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রি ও ডেলিভারির সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে, একশপের মাধ্যমে বাজারজাতকৃত গ্রামীণ পণ্যের প্রায় ২০ ভাগ নারী দ্বারা উৎপাদিত হয়। একশপ–এর ইকোসিস্টেম চেইনে দেশব্যাপী ৫৬ হাজারের অধিক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী এবং সাড়ে ছয় হাজারের অধিক ডিজিটাল সেন্টার যুক্ত রয়েছে।

এর পাশাপাশি ই-কমার্স এজেন্ট হিসেবে দুই হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাজ করছে যাতে তারা স্থানীয় লজিস্টিক হাব হিসাবে সেবা প্রদানের মাধ্যমে আরও দ্রুত এবং স্বল্প মূল্যে পণ্যের ডেলিভারি প্রদানে সক্ষম হয়। এই প্রক্রিয়াটি সফল হলে দেশব্যাপী গ্রামীণ পর্যায়ে ২০ হাজারের বেশি যুবকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং ডেলিভারি সেবার চার্জ গ্রাহকের আরও নাগালে চলে আসবে।

পি-কমার্স ফোনে-নিত্য-পণ্য (৩৩৩-৫) এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণ কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য এবং জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য সেবা পেয়েছেন।

'ফুড ফর নেশন' প্ল্যাটফর্মে কৃষক এবং ব্যবসায়িদের স্থানীয় বাজারের দামে কৃষি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে পারেন। এর ফলে পচনশীল ও সাধারণ কৃষি পণ্য মধ্যস্বত্বভোগীবিহীন দ্রুত বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মের সাথে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫ হাজার কৃষক ও পাইকারী বিক্রেতা এবং ১৬টি ই-কমার্স কোম্পানি নিবন্ধিত আছে। জাতিসংঘের ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের সহায়তায়, এটি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের, বিশেষ করে নারীদের অনলাইন ব্যবসায়িক সক্ষমতা, কর্মদক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

পাশাপাশি বাংলাদেশে একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরিতে সরকারি মালিকানায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনে পরিচালিত প্রথম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি হিসেবে ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ ২০২০ সাল থেকে মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

কোম্পানিটি স্টার্টআপদের মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে ১০০ কোটি টাকার ফান্ড থেকে সিড স্টেজে সর্বোচ্চ ১ কোটি এবং গ্রোথ গাইডেড স্টার্টআপ রাউন্ডে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সক্ষমতা রাখে। এর মধ্যে গত বছর সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। যার সুযোগ লাভ করেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সেবা এক্সওয়াইজেড ও চালডাল ডটকম।


ফুটওয়্যার এবং অন্যান্য সকল ধরনের পণ্য পাইকারি পাওয়া যাচ্ছে ওয়াকন বাংলাদেশ কোম্পানিতে ।


একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বিপণন সেবাকে প্রচলিত ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ই-কমার্সের অনেক ধরনের উদ্ভাবনের একটি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং, যেটি এখনো নতুন কিন্তু সম্ভাবনাময় একটি খাত। তাই এর বিকাশে অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো অর্জিত পরিষেবা ফি এর বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করা যেতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, সম্ভাবনাময় অনলাইন কমার্স খাতকে বেড়ে উঠার পর্যাপ্ত সুযোগ দিলে অদূর ভবিষ্যতে সরকারের কোষাগারে এবং জনসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে, অন্যথায় এই শিল্প প্রাথমিক অবস্থাতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবার একটি আশংকা কিন্তু থেকেই যাবে।


রেজওয়ানুল হক হেড অব ই–কমার্স, এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ

All categories
Flash Sale
Todays Deal